![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhJF1S3ULvb8wi3F6icebGa3SxubcX0P0UUBOzgRiJjnJ9aS8mhMNK3vs9l9RqcayIoueXbH97z0jXimcL1uGxDl4k3ZLFao6MqAaEaBr_LJ0qAf8SU7rDbeJFORVZ3-s8BsKjdMlZq5R2A/s1600/%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%2599%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%2597%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A7%25E0%25A7%2581+%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25A4%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25AF%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2595%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A1%25E0%25A7%2587+%25E0%25A6%259C%25E0%25A6%25BF%25E0%25A7%259F%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%2589%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25B9%25E0%25A6%25AE%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%2582%25E0%25A6%25B6%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B2%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25B7%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%259F%25E0%25A6%25A4%25E0%25A6%25BE+%25E0%25A6%258F%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%2582+%25E0%25A6%2596%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0+%25E0%25A6%25AA%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25B0%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25B8%25E0%25A6%25A8.jpg)
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যও নিশ্চিত করে যে, জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত একজন ব্যাক্তি।
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য হতে জানা যায়, পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরিকল্পনা করছে। কারন, তারা পাকিস্তান ভাঙার জন্য বঙ্গবন্ধুকে দায়ী করতো। এবং বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে প্রতিস্থাপন করার জন্য রাওয়ালপিন্ডির পছন্দের ব্যাক্তি ছিল জেনারেল জিয়া।
অপরদিকে শীতলযুদ্ধের উত্তাল সেই সময়ে রাশিয়া ও ভারতের সাথে বাংলাদেশের উষ্ম সম্পর্কের মূল ব্যাক্তিত্ব বঙ্গবন্ধুকে দৃশ্যপট হতে সরিয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল আমেরিকা'র সিআইএ। ফলশ্রুতি বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনায় একযোগে কাজ শুরু করে পাকিস্তানের আইএসআই ও সিআইএ। এই লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালে ওয়াশিংটনে আইএসআই ও সিআইএ কর্মকর্তারা জিয়ার সাথে বৈঠক করে। ছয় সপ্তাহের ওই সফরে সফর-পরিকল্পনার বাইরে পাকিস্তান দূতাবাস ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকের বিষয়ে ফিরতি পথে লন্ডনে ভারতীয় কূটনীতিক শশাঙ্ক ব্যানার্জী জিজ্ঞেস করলে জিয়া তা স্বীকার করেছিল এবং বিষয়টিকে কিছুই নয় বলে উড়িয়ে দিতে চেয়েছিল।
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা হতে এইসকল তথ্য পেয়ে ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধুকে সামরিক অভ্যুত্থানের বিষয়ে সর্তক করেছিলেন, বিশেষ করে জিয়া ও ফারুকের বিষয়ে সর্তক করা হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বাঙালির ভালোবাসায় ও অাস্থায় এই বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ওরা আমার সন্তান, ওরা কি করে আমার ক্ষতি করবে?
একটি ইন্টারভিউয়ে সাংবাদিক এন্থনি মাসক্যারেনহাসকে বঙ্গবন্ধুর খুনি ফারুক ও রশীদ বলেছিল, বঙ্গবন্ধু হত্যা পরিকল্পনার কথা জানতো জিয়াউর রহমান।
তারা জিয়াউর রহমানকে তাদের পার্পাস সার্ভ করার জন্য বঙ্গবন্ধুর পরিবর্তে প্রতিস্থাপন করতে চেয়েছিল। এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে ১৯৭৫-এর ২০ মার্চ তারা জিয়ার সাথে বৈঠক করেছিল।
জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যায় তার সম্মতি জানিয়ে বলেছিল, 'সেনাবাহিনীর সিনিয়র অফিসার হিসেবে আমি বিদ্রোহে সরাসরি যুক্ত থাকতে পারি না কিন্তু তোমরা জুনিয়র অফিসাররা এইবিষয়ে এগিয়ে যাও'।
জিয়াউর রহমান ছিল সুযোগসন্ধানী, একটি ঘটনার সুফল হস্তগত করতে তার জুড়ি মেলা ভার। তার এই চরিত্র পাকিস্তান সামরিক বাহিনীতে থাকাকালীন সময়ে ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড পরবর্তী ও তার শাসনামলের নানান ঘটনায় সুস্পষ্ট। তাই, একদিকে জিয়া বঙ্গবন্ধু হত্যায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত হতে অস্বীকৃতি জানায় এবং অপরদিকে বিদ্রোহে উৎসাহিত করে এবং এই বিষয়ের প্রতিকারে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। মূলতঃ জিয়া দেখতে চেয়েছিল, অস্থির সেই সময়ে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।
জিয়ার শাসনামলে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তাদের সাংবিধানিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সহ সরকারি উচ্চপদে বহাল করেছিল; এসবই প্রমাণ করে বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমান একজন সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তি।
খুনিরা হয়েছিল পুরষ্কৃতঃ
বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড সংঘটিত হবার পর প্রায় দুই দশক পর্যন্ত সকল সরকার (১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ নির্বাচিত হবার আগ পর্যন্ত) বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুনর্বাসিত করেছিল, তাদের বহাল রাখা হয়েছিল সরকারের উচ্চপদে, রাজনীতিতেও ছিল তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের ষড়যন্ত্রী খন্দকার মোশতাক, জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ ও খালেদা জিয়ার শাসনামলে এই খুনিরা ছিল রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সুবিধাভোগী। অবস্থা এরকম যে, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের জন্য তাদের পুরষ্কৃত করা হচ্ছে।
১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর, বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের মাসখানেকের মাথায় ষড়যন্ত্রী প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক আহমেদ খুনিদের সাংবিধানিকভাবে রক্ষা করার জন্য কুখ্যাত 'ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ' জারি করে।
জিয়াউর রহমানের শাসনামলে খুনিদের সরকারি উচ্চপদে বহাল সহ দেশত্যাগের সকল সুবিধে করে দেয়া হয়। ১৯৮২ সালে খুনি ফারুক এরশাদের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার সুযোগ পেয়েছিল; এটি ছিল মূলতঃ এরশাদের একটি কূটনীতিক চাল।
এরশাদের শাসনামলে ১৯৮৭ সালের ৭ নভেম্বর খুনি ফারুক, রশীদ, বজলুল হুদা ফ্রিডম পার্টি নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করে। জাতীয় প্রেস ক্লাবে উদ্বোধনের দিন ফ্রিডম পার্টির সন্ত্রাসীরা গোলাগুলি করে তাদের শক্তি প্রদর্শন করে, এতে একজন খুন হয়েছিল। ফ্রিডম পার্টি ছিল সন্ত্রাসী, গডফাদারদের একটি আখড়া। ১৯৮৮ সালে ফ্রিডম পার্টির নেতা খুনি রশীদ সংসদ নির্বাচন করেছিল।
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিতর্কিত ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুনি খন্দকার আবদুর রশীদ (ষড়যন্ত্রী মোশতাকের আত্মীয়) কুমিল্লার চান্দিনা হতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় এমপি নির্বাচিত হয়, তাকে পরবর্তীতে বিএনপি সেই সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা করেছিল। এছাড়া খুনি ফারুক ঢাকা হতে সংসদ নির্বাচন করেছিল।
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রাজনৈতিক দল ফ্রিডম পার্টির সন্ত্রাসী কার্যক্রম এসবেই শেষ থাকেনি; ২০০৯ সালে ফজলে নূর তাপসের উপর বোমা হামলার অভিযোগে খুনি মেজর ডালিমের ছোটভাই ফ্রিডম পার্টির নেতা কামরুল হাসান স্বপন ও খুনি আবদুর রশীদের মেয়ে ফ্রিডম পার্টির নেত্রী মেহনাজ রশিদকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সামরিক বাহিনীতে প্রমোশন, বৈদেশিক মিশনে চাকুরি, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে নিরাপত্তা প্রদান, রাজনীতি করার সুযোগ, পবিত্র সংসদে সদস্য হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু পরবর্তী সরকারগুলো। লাখো শহিদের স্বাধীন সার্বভৌমে বাংলাদেশে বিশ্বাসঘাতকতা আর রাষ্ট্রদ্রোহিতার রাজত্ব চলেছিল সেই দুই দশক; রাষ্ট্রের জনকের হত্যাকারীরা হয়েছিল নন্দিত, পুরষ্কৃত।
এগিয়ে চলো পোর্টালে আগস্ট ১৩, ২০১৭-তে প্রকাশিত
No comments:
Post a Comment